এনইসি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের মাধ্যমে ত্রিপুরার উন্নয়নে আরো গতি আসবে: মুখ্যমন্ত্রী

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিলের (এনইসি) পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন ত্রিপুরা রাজ্য এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে। কারণ এই ধরনের বৈঠকের মাধ্যমে এই অঞ্চলে উন্নয়নমূলক কাজে আরো গতি নিয়ে আসবে। বুধবার সন্ধ্যায় আগরতলার কৃষ্ণনগরে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এর পাশাপাশি সংবিধান প্রণেতা ড. বি আর আম্বেদকরকে নিয়ে রাজনীতি ইস্যুতে বিরোধী কংগ্রেস দলের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।  মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন,  নর্থ ইস্টার্ন কাউন্সিলের (এনইসি) ৭২তম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলাকালীন উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সমস্ত মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালগণ উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁরা ত্রিপুরা সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা অর্জন করেছেন। অনেক মানুষ এখনো ত্রিপুরা সম্পর্কে তেমনভাবে সচেতন নন। প্রতিনিধিরা এখানে আসার পর ত্রিপুরার বাঁশ, আগর, রাস্তাঘাট এবং পর্যটন সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হন। আর এটা আমাদের জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। নর্থ ইস্ট স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার সোসাইটি এবং ব্যাংকার্সদেরও সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে সারা দেশের ব্যাংকাররা অংশগ্রহণ করেছিলেন। এটি আমাদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। ব্রু শরনার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য ৮০০ কোটি টাকার অধিক ব্যয় করা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্রু প্রকল্পের সমস্ত কাজ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এনইসির মতো অধিবেশন আরও উন্নয়নমূলক কাজের গতি প্রশস্ত করবে। এখন ত্রিপুরা বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্থান নিশ্চিত করেছে। আর আমরা এর থেকে উপকৃত হবো।

ডাঃ সাহা জানান, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও বর্তমান পরিস্থিতি সহ অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা, সীমান্তের অবস্থা, বিএসএফ, ত্রিপুরা পুলিশ এবং সিআরপিএফ এর বর্তমান শক্তি সম্পর্কে অবগত করেছি। আগামী দিনে আমাদের কী প্রয়োজন তাও বলেছি। সবকিছু উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও আলোচনা করা হবে। এই বৈঠক আন্তঃরাজ্য সমন্বয় বাড়াবে। বৈঠকে আমরা মাদকমুক্ত উত্তর-পূর্ব তৈরির উপর জোর দিয়েছি। আমাদের বিভিন্ন সমস্যাগুলিকে সমাধান করার উদ্যোগ নিয়েছি এবং আমাদের উন্নয়নমূলক কাজগুলিকে তুলে ধরেছি। উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রীগণও তাদের নিজ নিজ রাজ্যের উন্নয়নের বিষয় সম্পর্কে তুলে ধরেন। তাই বিরোধীদের উচিত রাজ্যে এই ধরনের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি আয়োজনের জন্য আমাদের প্রশংসা করা। 

সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, দেশের সংবিধান প্রণেতা ডঃ বি আর আম্বেদকরের নাম ব্যবহার করে নাটক মঞ্চস্থ করছে কংগ্রেস দল। ড: আম্বেদকর ইস্যুতে অযথা ভারতীয় জনতা পার্টিকে নিশানা করা হচ্ছে। আদতে কংগ্রেস দলই আম্বেদকর বিরোধী। তারা যা করছে সেটা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য প্রহসন মাত্র। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই, কংগ্রেস কখনই ডঃ বি আর আম্বেদকরকে সম্মান করেনি। কংগ্রেস এখন ড: আম্বেদকরের পদত্যাগের বিষয় নিয়ে নীরব। কিন্তু আমরা জানি কিভাবে তারা তাঁকে অসম্মান করেছিল। তিনি একজন কিংবদন্তি ছিলেন এবং কংগ্রেসের আমলে তাঁকে ভারতরত্ন বা পদ্মভূষণের মতো কোনো জাতীয় সম্মান প্রদান করার ব্যবস্থা করেনি। আমরা তাদের এই ঘৃণ্য রাজনীতির জন্য কংগ্রেসের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করছি। বিজেপি এমন লোকদের সম্মানে বিশ্বাস করে যারা দেশের উন্নয়নের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। অন্যদিকে কংগ্রেস পরিবার কেন্দ্রিক রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত থাকে। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি তথা সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, প্রদেশ বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ সুনীত সরকার সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *