রাজ্য সরকারের আধিকারিকগণ প্রশাসনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। যা রাজ্যে সুশাসনের অন্যতম উদাহরণ। সুশাসনের অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা। সেই দিশায় কাজ করছে রাজ্য সরকার। বুধবার আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে সুশাসন দিবস পালনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন উপলক্ষে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আজ আমরা ভারতরত্ন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর শতবর্ষ উদযাপন করছি। সর্বপ্রথমে আমি উনার প্রতি সম্মান জানিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করি। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অটল জীর জন্মদিনকে সুশাসন দিবস হিসেবে পালন করার আহ্বান রাখেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে আজ এই দিনটি সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে। সুশাসনের মূল লক্ষ্য দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন। আমাদের সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে এবং সেটা করার মাধ্যমে মানুষ আমাদের প্রতি আস্থা রাখবেন। রাজ্যের জনগণ আমাদের প্রতি আস্থা রেখেছেন এবং এজন্য অফিসারগণ মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। রাজ্যের জনগণের কল্যাণে সবাইকে কাজ করতে হবে। স্থানীয় উন্নয়ন সহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা ‘আমার সরকার’ পোর্টাল চালু করেছি। যেখানে জনগণ সরাসরি তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬০% তরুণ প্রজন্ম। তাই তাদের মেধা ও সম্ভাবনাকে রাজ্যকে শক্তিশালী করে তোলার কাজে লাগাতে হবে। জাতীয় স্তরে অনেক মানুষ ত্রিপুরার উন্নয়ন সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত নন। তাই সাম্প্রতিক হরিয়ানা সফরে এবিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়াস নিয়েছি। ডাঃ সাহা বলেন, আমরা রাজ্যে ২০১৮ সালের আগের অবস্থা দেখেছি এবং ২০১৮ সালের পরের অগ্রগতি দেখেছি। আমি হরিয়ানায় এই বিষয়গুলি তুলে ধরেছি। আমরা জানি পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় কীভাবে মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তিনি সর্বদাই সমাজের অন্তিম ব্যক্তিকে সরকারি স্কিম প্রদানের উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। এই কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। আর এখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সরকারি প্রকল্পগুলি মূলত গ্রামীণ জনগণের কল্যাণে রাখা হয়েছে। যা আমাদের রাজ্য সরকার বাস্তবায়ন করছে। এই স্কিমগুলির বাস্তবায়ন সম্পর্কে তাদের আপডেট করতে আমাদের দিল্লির সাথেও আলোচনা করতে হয়। আর সুশাসন বলতে এটাই বোঝায় ৷
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার অনেকগুলি প্রকল্প বাস্তবায়নে ১০০% সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা প্রতি ঘরে সুশাসনও চালু করেছি। যার লক্ষ্য মানুষের মৌলিক সমস্যা ও চাহিদা পূরণ করা। জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন ত্রিপুরা রাজ্যকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে। যেখানে বিদেশ থেকেও অনেক প্রতিনিধি আমাদের ত্রিপুরায় এসেছিলেন। আমরা রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিশায় কাজ করছি। বিনিয়োগকারীরা এখন ত্রিপুরায় আসছেন। আমাদের পর্যটন, বাঁশ, চা ইত্যাদি শিল্প সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের জিএসডিপি এবং মাথাপিছু আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটিকে আরও বৃদ্ধি করার জন্য আমাদের অবশ্যই আরও বেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে হবে এবং তাদের কাছে আমাদের পণ্যগুলি তুলে ধরতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, সুশাসন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, অতিরিক্ত প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক চৈতন্য মূর্তি সহ রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ।