বস্তির আগুনে পুড়ছে পড়ুয়াদের বইও, চিন্তায় পড়ুয়ারা

বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ ঢাকুরিয়া স্টেশন সংলগ্ন রেললাইনের ধারের বস্তিতে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০টি ঘর ভস্মীভূত হয়ে যায়। ওই ঘরগুলির মধ্যেই দু’টি ঘর ছিল কুসুম এবং সুমিতা-বিশ্বজিৎদের। কুসুম এ দিন বলে, ‘‘ওই সময়ে ঘরে ছিলাম না। তাড়াতাড়ি এসে ঘরের জিনিসপত্রের সাথে সাথে নিজের বইগুলো বার করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু দাউ দাউ করে ভিতরে তখন সব জ্বলছিল। কেও ভেতরে ঢুকতে পারেনি। তবে মা কিছু জিনিস বার করার সময় আমার মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডটা বার করতে পেরেছিলো।’’ কুসুম বলে চলে, ‘‘এক বছরও সময় পাওয়া যায় না দ্বাদশে ওঠার পরে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলে আসে। আবার নতুন করে বই কেনার ক্ষমতাও নেই। কী ভাবে বই জোগাড় করে পড়াশোনা করব? কিছুই বুঝতে পারছি না।’’

অন্য দিকে, সুমিতা নস্কর পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে এবং তার ভাই বিশ্বজিৎ সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই তাদের প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন শুরু হওয়ার কথা। তারা বই পায় স্কুল থেকে। কিন্তু সেই বই পুড়ে গিয়েছে। এ বার সেই বই আবার পাবে কি? এই চিন্তায় দুই ভাইবোন। সুমিতা বলে, ‘‘বাড়ির সব মূল্যবান জিনিসের সঙ্গে আমাদের সব বই পুড়ে গিয়েছে। জানি না, এত কম সময়ের মধ্যে স্কুল থেকে আবার বই পাব কি না।’’ যাঁদের ঘর পুড়েছে, তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় একটি ক্লাব। সেখানেই কুসুম, সুমিতা, বিশ্বজিৎরা আপাতত পরিবারের সঙ্গে আছে। কিন্তু বার বার সেই ক্লাব থেকে রেললাইন টপকে ভস্মীভূত ঘরে চলে আসছে তারা। তিন কিশোর-কিশোরী হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরছে পোড়া ধ্বংসস্তূপ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *