রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ প্রয়াত

রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ প্রয়াত হলেন। তিনি রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে তিনি বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।প্রয়াত কালে বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।

স্বামী স্মরণানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ ছিলেন। স্বামী আত্মস্থানন্দের জীবনাবসানের পর ২০১৭ সালে অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব নেন তিনি। মুত্রনালিতে সংক্রমণের কারণে তাঁকে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো হয়েছিল। ক্রমে তিনি সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত হন এবং শ্বাসকষ্টও দেখা দেয় তাঁর।তবে ৩ মার্চ আচমকা তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়।এরপর গত ১৩ মার্চ কৃত্রিম ভাবে শ্বাসকার্যের জন্য একটি নল ঢোকানো হয় তাঁর শ্বাসনালিতে এবং চিকিৎসকদের মতে, তাঁর কিডনিতেও সমস্যা হয়েছিল ।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন চলাকালীন তাঁকে দেখে যান । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে দেখে যান ।২০২২ সালেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন স্বামী স্মরণানন্দ ।তাঁকে তখন কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সে সময় দিন কয়েক চিকিৎসা চলার পর তিনি সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু জানুয়ারি মাসে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন ।

 স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ ১৯২৯-এ তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুরের আন্দামি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । খুব কম বয়সে মাকে হারান তিনি । ১৯৪৬-এ স্কুলের পাঠ শেষ করে নাসিকে বাণিজ্য বিভাগে ডিপ্লোমা করেন এবং এরপর  ১৯৪৯-এ মুম্বই পাড়ি দেন। শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুম্বই রামকৃষ্ণ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি ও ১৯৫২ সালে, স্বামী শঙ্করানন্দের কাছে মন্ত্রদীক্ষা নেন। ১৯৫৬ সালে ব্রহ্মচর্য নেন তিনি। ১৯৫৮-তে ‘অদ্বৈত আশ্রম’-এর কলকাতা শাখায় আসেন এবং দীর্ঘ ১৮ বছর ‘অদ্বৈত আশ্রম’-এর বিভিন্ন শাখায় কাজ করেছেন।কয়েক বছর স্বামী  বিবেকানন্দ প্রবর্তিত ইংরেজি পত্রিকা ‘প্রবুদ্ধ ভারত’-এর প্রবন্ধক সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন ।এছাড়া  প্রায় ১৫ বছর তিনি ‘রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ’-এর সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৩-তে রামকৃষ্ণ মিশনের গভর্নিং বডির সদস্য হন এবং ১৯৯১-এ চেন্নাই রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *